অঞ্জলি ১

ষষ্ঠ শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - আর্কাইভ - খ্রিস্ট্রধর্ম শিক্ষা - | NCTB BOOK
305
305
Content added By

ঘুরতে যাওয়া (উপহার ১-২)

165
165

এই অঞ্জলির অংশ হিসেবে শিক্ষক তোমাকে তোমার সহপাঠিদের সাথে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যেতে পারেন। সেখানে তোমার বন্ধুদের সাথে ঘুরে ঘুরে চারপাশ দেখবে। শিক্ষক যা নির্দেশনা দেন তা মন দিয়ে শুনবে। শিক্ষক কোনো প্রশ্ন করলে তোমার উত্তর জানা থাকলে উত্তর দিতে পারো। আর তোমার মনে কোনো প্রশ্ন আসলে তুমি তা শিক্ষককে জিজ্ঞেস করতে পারো। একটা কথা তোমাকে বলি, প্রশ্ন করায় লজ্জার কিছু নেই। তাই তোমার মনে কোনো প্রশ্নের উদয় হলে তুমি শিক্ষককে নিঃসঙ্কোচে জিজ্ঞেস করতে পারো।

শিক্ষক যদি তোমাদেরকে শ্রেণিকক্ষের বাইরে নিয়ে যান তবে নিজের এবং তোমার পাশের বন্ধুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করো। মনে রেখো তুমি কিছু কাজ নিজে নিজে করতে পারো, ঘরে-বাইরে কিছু কাজও তুমি নিশ্চয়ই করো বা করেছো। তাই তোমার উপর তোমার শিক্ষক, তোমার বাবা-মা/অভিভাবক এবং প্রিয় সকল মানুষের আস্থা আছে। যে কাজ তুমি জানো যে ভুল, তা করতে যেয়ো না। নিজের এবং পাশের বন্ধুর যত্ন নিও। 

এই ঘুরে দেখবার সময় তোমার প্রধান কাজ হলো চারপাশের সকল কিছুকে মন দিয়ে দেখার চেষ্টা করা, সৌন্দর্য বোঝার চেষ্টা করা। আমরা সুন্দর কোনো জায়গায় থাকার পরও বিভিন্ন ব্যস্ততায় ঐ জায়গার সৌন্দর্য ধারণ করতে ব্যর্থ হই। আমাদের মনোযোগ দিয়ে সৌন্দর্যকে খুঁজতে ও দেখতে হয়। তাই শিক্ষক যখন চারপাশের সুন্দর সবকিছু দেখান, মন দিয়ে দেখো। আর বুক ভরে নিঃশ্বাস নাও। তোমার চারপাশের সকল কিছু স্রষ্টার সৃষ্টি। তুমিও ।

Content added By

তোমার আর কী কী রূপ বা পরিচয় আছে (উপহার ৩-৪)

185
185

লিখতে পারো। যদি এই খেলার শেষে তোমার সবগুলো উত্তর "না" আসে, তবে মন খারাপ করার কিছু নেই। যীশু এই খেলাটা খেললেও তাঁর সবগুলোর উত্তর "না" আসতো।

এরপর তোমার বাবা-মা/অভিভাবককে জিজ্ঞেস করতে পারো যে তোমার কী কী পরিচয় আছে (একটা পরিচয় কিন্তু তুমি তাদের পোষা বা সন্তান)। তোমার বাবা-মা/অভিভাবক তোমার প্রশ্নটি বুঝতে না পারলে নিজের ঘরের লেখাটি দেখাও।

প্রিয় বাবা-মা/অভিভাবক,

আপনার সন্তান বা পোষা আপনার ছেলে বা মেয়ে এটা তার একটি পরিচয়, আরও পরিচয় হতে পারে সে কারো কাজিন, মাসতুতো ভাই বা পিসাতো বোন বা আরও অন্য কিছু। আপনার সন্তান বা গোধাকে এজাতীয় পরিচয়গুলো বলুন 

আরেকটা কথা, ভেবে দেখো তো, এই পরিচয়গুলোর পাশাপাশি গভীর আর কোনো পরিচয় কি তোমার আছে? তোমাকে বলি, তুমি যদি সবার প্রতি দয়ালু হও, যত্নশীল হও, কাউকে কষ্ট না দাও, তাহলে তোমার গভীর একটি পরিচয় হতে পারে তুমি “দয়ালু”। সবাই কিন্তু তোমাকে তখন দয়ালু একজন মানুষ হিসেবেই মনে রাখবে বা স্মরণ করবে।

Content added || updated By

উপস্থাপন বা presentation (উপহার ৫-৬)

185
185

উপস্থাপন করার সময় কিছু কাজ তোমাকে ঠিকমতো করতে হবে। যেমন তোমার পোশাক-পরিচ্ছদ ঠিকঠাক আছে কি না (তুমি যদি নিজের কাপড় নিজে খোও, তাহলে ভালো করে ধুবে যাতে ময়লা না থাকে আর যদি অন্য কেউ ধুয়ে দেয় তবে তাকে ধন্যবাদ দিও ভালো করে ধোয়ার জন্য)। শিক্ষকের দেওয়া নির্দেশনা মতন উপস্থাপন করবে যে সকল তথ্য তিনি চেয়েছেন তা ঠিকমতো উপস্থাপনে বলবে। আর সব বলতে হবে পরিষ্কার কণ্ঠে। খেয়াল রাখবে যে, তোমার কথা যারা শুনছে তারা যাতে স্পষ্টভাবে বুঝতে পারে।

যদি একক উপস্থাপন হয়, মানে তুমি একা উপস্থাপন করবে এমন হয় তবে তোমার ক্রম বা roll number আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। আর দলগত উপস্থাপনের ক্ষেত্রে সহপাঠী বা বন্ধুদের সাথে মিলেমিশে উপস্থাপন করবে।

তোমার সহপাঠী বা বন্ধুদের বিভিন্ন পরিচয়গুলো তাদের উপস্থাপন থেকে জেনে নিচে লিখে ফেলতে পারো।

 

 

 

 

 

 

 

Content added By

খেলা এবং পোস্টার (উপহার ৭)

176
176

শিক্ষক তোমাদের মজার একটি খেলা খেলতে বলতে পারেন। খেলাটা কার্ড দিয়ে খেলা হতে পারে। শিক্ষকের দিকনির্দেশনা মনোযোগ দিয়ে শোনো। এরপর আনন্দ করে সহপাঠী-বন্ধুদের সাথে ফেলাটায় অংশগ্রহণ করো।

খেলা শেষে শিক্ষক একটি পোস্টার দেখাতে পারেন। পোস্টারটি মন দিয়ে দেখো। পোস্টারের শিরোনাম হলো * পবিত্ৰ ত্ৰিত্ব Holy Trinity", যার “ত্রিত্ব” শব্দটি তোমার কাছে নতুন লাগতে পারে। “ত্রিত্ব” শব্দটি অর্থ দিয়ে বোঝা হয়তো কঠিন। তাই শিক্ষকের দেখানো পোস্টারটি দেখে তোমার মনে প্রশ্ন আসলে শিক্ষককে জিজ্ঞেস করতে পারো। এই পবিত্র ত্রিত্ব কিন্তু খ্রীষ্টধর্মের মৌলিক বিষয়।

শিক্ষকের দেখানো পোস্টারটি তুমি নিচে এঁকে ফেলতে পারো।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Content added By

খ্রিস্টধর্মের মৌলিক বিষয় (উপহার ৮-১৪)

283
283

প্রিয় শিক্ষার্থী, এখন চলো খ্রীষ্টধর্মের মৌলিক বিষয়সমূহ একটু জানা থাক। তোমাদের শিক্ষকও এই বিষয়ে জানাবেন, মজার মজার animation দেখাবেন। কিন্তু তার পাশাপাশি এখানেও বিষয়গুলো তোমরা চাইলে পড়তে পারো। যখনই কোনো কিছু বুঝতে কষ্ট হবে তোমার বাবা-মা/অভিভাবক বা ভাই/বোন বা শিক্ষককে জিজ্ঞেস করতে পারো। কোনো ছবি দেখে মনে প্রশ্ন আসলেও জিজ্ঞেস করতে পিছপা হবে না।

তুমি চাইলে নিচের link-গুলো থেকে তোমার বাসায় যদি কম্পিউটার থাকে সেখানে অথবা তোমার বাবা-মা/অভিভাবকের স্মার্টফোনে শিক্ষকের দেখানো video গুলো দেখতে পারো।

The Beginner's Bible: www.youtube.com/c/TheBeginnersBi.ble/ Saddleback Kids: www.youtube.com/c/SaddlebackKids/vid- eos

BibleProject: bibleproject.com/explore/

খ্রীষ্টধর্মের বিশ্বাস অনুসারে ঈশ্বর একজন। কিন্তু তিনি তিন ব্যক্তিরূপে আছেন, যা হলো পিতা ঈশ্বর, পুত্র ঈশ্বর (যীশু), এবং পবিত্র আত্মা ঈশ্বর।

 

পিতা ঈশ্বর - সৃষ্টিকর্তা 

তুমি যে এত সুন্দর পৃথিবীতে বাস করছো কখনও কি চিন্তা করেছো, কে এ অপরূপ পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন? দিনের আলোর জন্য সূর্য, রাতের জন্য চাঁদ ও তারা, আকাশ, নদী-সাগর, মহাদেশ যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি হলেন পিতা ঈশ্বর। তিনি ছয়দিন ধরে এ সুন্দর পৃথিবীর সব সৃষ্টি করেছেন। বাইবেলে সৃষ্টি সম্পর্কে কী লেখা আছে চলো তা দেখে আসি।

 

সৃষ্টির শুরুতেই ঈশ্বর মহাকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করলেন।

আদিপুস্তক ১ঃ১ 

ঈশ্বর বললেন, “আলো হোক।" আর তাতে আলো হলো। তিনি দেখলেন তা চমৎকার হয়েছে। তিনি অন্ধকার থেকে আলোকে আলাদা করে আলোর নাম দিলেন দিন, আর অন্ধকারের নাম দিলেন রাত। এইভাবে সন্ধ্যাও গেলো,

সকালও গেলো, আর সেটাই ছিল প্রথম দিন। 

আদিপুস্তক ১ঃ৩ঃ৫ 

আমরা আমাদের মত করে এবং আমাদের সংগে মিল রেখে এখন মানুষ তৈরি করি। তারা সমুদ্রের মাছ, আকাশের পাখী, পশু, বুকে-হাঁটা প্রাণী এবং সমস্ত পৃথিবীর উপর রাজত্ব করুক। পরে ঈশ্বর তাঁর মত করেই মানুষ সৃষ্টি করলেন। হ্যাঁ, তিনি তাঁর মত করেই মানুষ সৃষ্টি করলেন, সৃষ্টি করলেন পুরুষ ও স্ত্রীলোক করে।

আদিপুস্তক ২ঃ১৬ঃ২৭ 

এই ভাবে মহাকাশ ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যকার সব কিছুই তৈরি করা শেষ হল। ঈশ্বর তাঁর সকল সৃষ্টির কাজ ছয় দিনে শেষ করলেন; তিনি সপ্তম দিনে সৃষ্টির কোন কাজ করলেন না। এই সপ্তম দিনটিকে তিনি আশীর্বাদ করে নিজের উদ্দেশ্যে আলাদা করলেন, কারণ ঐ দিনে তিনি কোনো সৃষ্টির কাজ করেননি।

আদিপুস্তক ২ঃ১.৩ 

তোমাকে একটু সহজ করে বলি

সৃষ্টির সৌন্দর্য, বিশালতা, বৈচিত্র্য ও রহস্য নিয়ে মানুষ যুগ যুগ ধরে বিস্মিত ও মুগ্ধ হচ্ছে। আমাদের সবচেয়ে বড় ও পবিত্র কাজ মানুষসহ ঈশ্বরের সমস্ত সৃষ্টিকে সম্মান ও যত্ন করা। আমরা যেন কখনও সৃষ্টির কোন কিছুই ধ্বংস না করি, অপচয় কিংবা অপব্যবহার না করি। বাইবেলে এ কথা লেখা আছে যে প্রতিদিন ঈশ্বর তাঁর সৃষ্টির কাজ শেষে বলেছেন, “উত্তম”। মানুষকে সৃষ্টি করে তিনি বলেছেন “অতি উত্তম” (আদিপুস্তক ১:২৫, ৩১ ইত্যাদি পদ)। ঈশ্বর মানুষকে তাঁর সৃষ্টির লালন পালনের দায়িত্ব দিয়েছেন। সৃষ্টিকে ধ্বংস করার অর্থ আমাদের নিজেদেরই বিপদ ডেকে আনা। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন।

স্রষ্টার বিস্ময়কর একটি সৃষ্টি হল "বাতাস", যা ব্যতীত আমরা কেউই এক মুহূর্তও বেঁচে থাকতে পারি না। সমস্ত সৃষ্টির ধারাবাহিকতা চলমান রাখতে, ঈশ্বর জীবন্ত সবকিছুকে বংশবৃদ্ধির ক্ষমতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। খ্রীষ্টধর্ম আমাদের এ শিক্ষা দেয় যে স্রষ্টারূপে ঈশ্বর শূন্য থেকে সবকিছু সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর মুখের কথাতেই তা করেছেন।

 

পুত্র ঈশ্বর সামীর পরিত্রাতা 

একটা মজার গল্প বলি। নাসরতের এক ছোট্ট গ্রামে এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছিল। স্বর্গদূত গাব্রিয়েল সেই গ্রামের এক অপরূপ কুমারী, মরিয়ম (মারীয়া)-কে দেখা দিয়ে বলেন যে, সে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিবে। জানো তার নাম কী রাখা হয়েছে? তাঁর নাম যীশু। তিনিই পাপীর পরিত্রাতা। এবার এসো এ সম্পর্কে বাইবেলে কী আছে তা দেখি।

 

ইলীশাবেতের যখন ছয় মাসের গর্ভ তখন ঈশ্বর গালীল প্রদেশের নাসরত গ্রামের মরিয়ম নামে একটি কুমারী মেয়ের কাছে গাব্রিয়েল দূতকে পাঠালেন। রাজা দায়ূদের বংশের যোষেফ নামে একজন লোকের সংগে তাঁর বিয়ের কথাবার্তা ঠিক হয়েছিল। স্বর্ণদূত মরিয়মের কাছে এসে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বললেন, “প্রভু তোমার সংগে আছেন এবং তোমাকে অনেক আশীর্বাদ করেছেন।

এই কথা শুনে মরিয়মের মন খুব অস্থির হয়ে উঠল। তিনি ভাবতে লাগলেন এই রকম শুভেচ্ছার মানে কি। স্বর্ণদৃত তাঁকে বললেন, “মরিয়ম, ভয় কোরো না, কারণ ঈশ্বর তোমাকে খুব দয়া করেছেন। শোন, তুমি গর্ভবর্তী হবে আর তোমার একটি ছেলে হবে। তুমি তাঁর নাম যীশু রাখবে। তিনি মহান হবেন। তাঁকে মহান ঈশ্বরের পুত্র বলা হবে। প্রভু ঈশ্বর তাঁর পূর্বপুরুষ রাজা দায়ূদের সিংহাসন তাঁকে দেবেন।

যীশু তোমাকে বললেন, “আমিই পথ, সত্য আর জীবন। আমার মধ্য দিয়ে না গেলে কেউই পিতার কাছে যেতে পারে না। তোমরা যদি আমাকে জানতে তবে আমার পিতাকেও জানতে। এখন তোমরা তাঁকে জেনেছ আর তাঁকে দেখতেও পেয়েছ।”

ফিলিপ যীশুকে বললেন, “প্রভু, পিতাকে আমাদের দেখান, তাতেই আমরা সন্তুষ্ট হব।"

যীশু তাঁকে বললেন, “ফিলিপ, এতদিন আমি তোমাদের সংগে সংগে আছি, তবুও কি তুমি আমাকে জানতে পার নি? যে আমাকে দেখেছে সে পিতাকেও দেখেছে। তুমি কেমন করে বলছ, 'পিতাকে আমাদের দেখান?

পবিত্র শাস্ত্রের কথামত যীশু খ্রীষ্টই সেই পাথর, যাঁকে রাজমিস্ত্রিরা, অর্থাৎ আপনারা বাদ দিয়েছিলেন; আর সেটাই সবচেয়ে দরকারি পাথর হয়ে উঠল। পাপ থেকে উদ্ধার আর কারও কাছে পাওয়া যায় না, কারণ সারা জগতে আর এমন কেউ নেই যার নামে আমরা পাপ থেকে উদ্ধার পেতে পারি।

 

তোমাকে একটু সহজ করে বলি

বাইবেলে আছে যে, মানুষ পিতা ঈশ্বরের আলো লঙ্ঘন করে পাপ করেছে। পাপের ফলে মানুষ ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে চলে গিয়েছে। আমরা বাবা-মায়ের কথা না শুনলে তারা কষ্ট পান। তেমনি পিতা ঈশ্বর আমাদের অবাধ্যতার জন্য দুঃখ পান। ঈশ্বর পাপকে ঘৃণা করেন। কিন্তু ঈশ্বর ক্ষমাশীল ও দয়াময়; তিনি চান না যে, মানুষ নরকে যাক। তিনি মানুষকে পাপ থেকে মুক্তি দিতে নিজ পুত্রকে মানুষরূপে এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।

পুত্র ঈশ্বর যীশুর জন্মের বিষয়ে স্বর্গদূত, পিতা যোষেফকে দর্শন দিয়ে বলেছেন, “তুমি তাঁর নাম যীশু (ত্রাণকর্তা) রাখবে, কারণ তিনি তাঁর লোকদের পাপ থেকে উদ্ধার করবেন।" পুত্র ঈশ্বর পাণীর পরিত্রাণের জন্য মৃত্যুবরণ করলেন। মৃত্যুর পরে তৃতীয় দিনে তিনি কবর থেকে পুনরুত্থিত হলেন। তিনি মৃত্যুঞ্জয়ী।

 

পবিত্র আত্মা ঈশ্বর – আত্মিক নবায়নকর্তা

তুমি নিশ্চয়ই যীশুর পুনরুত্থানের গল্প শুনেছ। এখন তোমাকে আরেকটা গল্প বলতে চাই। গল্পটি শুনে তুমি আশ্চর্য না হয়ে পারবে না। যীশু স্বর্গে চলে গেলেন। কিন্তু তিনি বলে গেলেন যে, তাঁর প্রিয় শিষ্যদের একা রেখে যাবেন না। ঈশ্বরের আত্মাকে তাদের কাছে খুব তাড়াতাড়ি পাঠানো হবে। শিষ্যদের কাছে পবিত্র আত্মা কীভাবে এসেছিলেন বাইবেলে সে গল্প খুব সুন্দর করে লেখা আছে। চলো আমরা সেটা পড়ি।

বাপ্তিস্ম গ্রহণ করবার পর যীশু জল থেকে উঠে আসবার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর সামনে আকাশ খুলে গেল। তিনি ঈশ্বরের আত্মাকে কবুতরের মত হয়ে তাঁর উপরে নেমে আসতে দেখলেন। তখন স্বর্গ থেকে বলা হল, “ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, এর উপর আমি খুবই সন্তুষ্ট।"

এর কিছু দিন পরে পঞ্চাশত্তমী পর্বের দিনে শিষ্যেরা এক জায়গায় মিলিত হলেন। তখন হঠাৎ আকাশ থেকে জোর বাতাসের শব্দের মত একটা শব্দ আসল এবং যে ঘরে তাঁরা ছিলেন সেই শব্দে সেই ঘরটা পূর্ণ হয়ে গেল। শিষ্যেরা দেখলেন আগুনের জিভের মত কি যেন ছড়িয়ে গেল এবং সেগুলো তাঁদের প্রত্যেকের উপর এসে বসল। তাতে তাঁরা সবাই পবিত্র আত্মাতে পূর্ণ হলেন এবং সেই আত্মা থাকে যেমন কথা বলবার শক্তি দিলেন সেই অনুসারে তাঁরা ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় কথা বলতে লাগলেন।

সেই সময় জগতের নানা দেশ থেকে ঈশ্বরভক্ত যিহুদী লোকেরা এসে বিরূশালেমে বাস করছিল। তারা সেই শব্দ শুনল এবং অনেকেই সেখানে জড়ো হল। নিজের নিজের ভাষায় শিষ্যদের কথা বলতে শুনে সেই লোকেরা যেন বুদ্ধিহারা হয়ে গেল। তারা খুব আশ্চর্য হয়ে বলল, “এই যে লোকেরা কথা বলছে, এরা কি সবাই গালীলের লোক নয়? যদি তা-ই হয় তাহলে আমরা প্রত্যেকে কি করে নিজের নিজের মাতৃভাষা ওদের মুখে শুনছি?

যীশু বললেন, “যে সাহায্যকারীকে আমি পিতার কাছ থেকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব, তিনি যখন আসবেন তখন তিনিই আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবেন। ইনি হলেন সত্যের আত্মা যিনি পিতার কাছ থেকে আসবেন। আর তোমরাও আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবে, কারণ প্রথম থেকেই তোমরা আমার সঙ্গে সঙ্গে আছ।”

তোমাকে একটু সহজ করে বলি

বাইবেলের পুরাতন নিয়মে ইরীয় ভাষায় পবিত্র আত্মা বোঝাতে “রুয়ায়" শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। নতুন নিয়মে গ্রীক ভাষায় পৰিত্ৰ “আত্মা” বোঝাতে “হিউমা" শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। "ব্লুয়াখ" ও "মিউমা” উভয় শব্দের অর্থ "বাতাস"। বাতাস ছাড়া আমরা দৈহিকভাবে বেঁচে থাকতে পারি না। ঠিক তেমনি খ্রীষ্টধর্মের শিক্ষানুসারে "পবিত্র আত্মা” ছাড়া আধ্যাত্মিক অর্থাৎ আদর্শ জীবন যাপন করা যায় না। পৰিত্ৰ আত্মা

১৩ত্রিত্ব-ঈশ্বরের তৃতীয় ব্যক্তি। পবিত্র আত্মা যীশু খ্রীষ্টের পরিত্রাণ কাজ বিশ্বাস করতে এবং গ্রহণ ও ধারণ করতে আমাদের সাহায্য করেন। তিনি আমাদের জীবনকে নবায়ন করেন। পাপের পথ পরিত্যাগ করে ঈশ্বরের ইচ্ছানুযায়ী চলতে তিনি আমাদের শক্তি দেন। পবিত্র আত্মা আমাদের খ্রীষ্টের আদর্শে জীবন যাপন করতে অনুপ্রেরণা, সৎসাহস, সদিচ্ছা ও সর্বোপরি জ্ঞান দান করেন। পবিত্র বাইবেলে পবিত্র আত্মাকে বুঝানোর জন্য। বিভিন্ন প্রতীক ব্যবহার করা হয়েছে, যেমন: কবুতর, ভেল, আগুন, বায়ু, জল, বৃষ্টি, শিশির ইত্যাদি।

পবিত্র আত্মা আমাদের জীবনকে অপবিত্রতা থেকে রক্ষা করে। জল ও বৃষ্টি যেমন প্রাণ সঞ্চার করে তেমনি পবিত্র আত্মার স্পর্শ আমাদের জীবনকে নতুন চেতনা ও শুচিতা দান করে। আমরা জগৎ ও জীবন সম্পর্কে নতুন ও পবিত্র ধারণা লাভ করতে পারি। পবিত্র আত্মার শক্তিতেই একজন খ্রীষ্ট বিশ্বাসী মানুষের জন্য সুন্দর কাজ করতে পারেন, যা পিতা ঈশ্বরের গৌরব ও মহিমা প্রকাশ করে।

আমাদের মনে রাখতে হবে যে, সৃষ্টির প্রথমে ঈশ্বরের আত্মা ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন। ঈশ্বরই স্বয়ং পবিত্র আত্মা। পুরাতন নিয়মে সকল ভাববাদী (প্রবক্তা) সেই আত্মার শক্তিতে কাজ করেছেন। কুমারী মরিয়ম: (মারীয়া) এর গর্ভে যীশু পবিত্র আত্মার প্রভাবে জন্মেছেন। যীশু পবিত্র আত্মার শক্তিতে সকল কাজ করেছেন। যীশুর শিষ্যগণ পবিত্র আত্মার শক্তিতেই সুসমাচার প্রচার করেছেন। যীশুর অবগাহনের সময় তাঁর উপরে পৰিত্ৰ আত্মা নেমে এসেছেন।

পবিত্র বাইবেল অনুযায়ী পবিত্র আত্মা আমাদের জীবনে সাতটি দান ও নয়টি ফল প্রদান করেন। দানগুলো হল: প্রজ্ঞা, বুদ্ধি, বিবেক, মনোবল, জ্ঞান, ধর্মানুরাগ ও ঈশ্বরভীতি। আর ফলগুলো হল: "ভালোবাসা, আনন্দ, শান্তি, সহাগুণ, পয়ার স্বভাব, ভালো স্বভাব, বিশ্বস্ততা, নম্রতা ও নিজেকে দমনা (গালাতীয় 2:22)। তবে সাধু জেরোম পবিত্র আত্মার আরও তিনটি ফলের কথা উল্লেখ করেছেন: লজ্জাশীলতা, সংযম ও বিশুদ্ধতা।। আমাদের জীবনে চরিত্র গঠনের জন্য পবিত্র আত্মার দান ও ফলগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

Content added By

প্রশ্নোত্তর ও মুক্ত আলোচনা (উপহার ১৫-১৭)

222
222

শিক্ষক তোমাদের জন্য একটি মুক্ত আলোচনার আয়োজন করতে পারেন। এই আলোচনায় পৰিত্ৰ ত্ৰিত্ব সম্বন্ধে যে বিষয়বস্তু তুমি জেনেছো তার আলোকে কোনো প্রশ্ন বা ভাবনা শিক্ষক তোমাদের জানাতে পারেন। এই আলোচনায় তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে অংশগ্রহণ করো। শিক্ষকের নির্দেশনা অনুসরণ করে কোনো বিশ্লেষণ করতে বলা হলে তোমার অর্জিত ধারণা ব্যবহারে সংকোচবোধ কোরো না।

এটা তোমাকে বলছি কারণ তোমার ধারণায় যদি কোন অস্পষ্টতা থেকে থাকে তাহলে তোমার নিঃসংকোচ ব্যবহারে বা খোলামেলা আলোচনায় তা বের হয়ে আসবে। এই কার্যের অংশ হিসেবে শিক্ষক একটি বিতর্কের আয়োজন করতে পারেন। সেই বিতর্কে তোমার এমন কোনো ভাবনা উঠে আসতে পারে যে ভাবনাটা সঠিক নয়। শিক্ষক এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীরা যখন এই ভুলটা চিহ্নিত করবে তখন ভালোভাবে বুঝতে চেষ্টা করবে কেন তোমার ভাবনাটা সঠিক নয়। যদি এই একই ঘটনা তোমার সহপাঠীর সাথে ঘটে তবে তাকেও। ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা নিয়ে বুঝিয়ে বলবে।

কাজটি চলতে চলতে তোমার খাতায় এক বা একাধিক প্রশ্ন লিখে ফেলো, যার উত্তর তোমার কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। এরকম প্রশ্ন যে তোমাকে লিখে ফেলতেই হবে, তা না। কিন্তু খ্রীষ্টধর্মের মৌলিক বিষয়গুলো জানার জন্য এই সেশনটিই উপযুক্ত সময়।

Content added || updated By

নাটিকা করবো (উপহার ১৯-২০)

219
219

শিক্ষক তোমাদের একটি নাটিকার বিষয়ে অনেক অনেক কথা বলবেন। এই অনেক অনেক কথাগুলোকে অনেক অনেক আনন্দ নিয়ে গ্রহণ করো। শিক্ষক তোমাদের নাটিকার চিত্রনাট্যটি দেখাবেন যেটা এ লেখাটির শেষেও দেখতে পাবে। লক্ষ করো চিত্রনাট্যের অনেকগুলো শব্দ বা রীতি তোমার বুঝতে কষ্ট হতে পারে। শিক্ষক তোমাদের এই চিত্রনাট্যটি বুঝিয়ে দিবেন। এরপরও তোমার মনে যদি কোনো প্রশ্ন আসে তবে শিক্ষককে জিজ্ঞেস করো।

 

তারপর শিক্ষক তোমাদের বিভিন্ন কাজ ভাগ করে দিবেন। তোমার উপর ন্যস্ত কাজ তোমার ধর্ম পালনের মত। তাই তোমার সর্বোত্তম প্রচেষ্টা দিয়ে তা সম্পাদন করবে। তোমার সহপাঠী যদি তোমার কাছে সাহায্য চায় তাহলে সাধ্যমত সাহায্য করো।

ভাগ করা কাজের অংশ হিসেবে তুমি কোনো চরিত্রে অভিনয়ের দায়িত্ব পেতে পারো। যদি এই দায়িত্ব না। পাও তবে মন খারাপ করবে না। এই নাটিকাটির অন্য কোনো কাজে তুমি অবশ্যই উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারবে। এটা একটু বোঝার চেষ্টা করো তোমার এবং তোমার সহপাঠীর সম্মিলিত সাহায্য ছাড়া নাটকটির মঞ্চায়ন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তুমি যত নাটিকা দেখেছ বা দেখবে সব নাটিকার মঞ্চায়নে দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য অনেক শিল্পী জড়িত।

যদি তুমি কোনো সবাক চরিত্রে অভিনয়ের দায়িত্ব পাও তবে তোমার চরিত্রের সংলাপগুলো আত্মস্থ করো। এখানে একটা বিষয় তোমাকে খেয়াল রাখতে হবে যে তোমার সংলাপ তোমার সহশিল্পীদের সংলাপের সাথে একত্রিত হয়ে নাটিকাটিকে পূর্ণরূপ দেয়। তাই প্রস্তুতির সময় সহশিল্পীদের থেকে আলাদা না হয়ে একসাথেই অনুশীলন করো।

যদি নির্বাক চরিত্রে অভিনয়ের দায়িত্ব পাও তাহলে শিক্ষকের কাছ থেকে মঞ্চে তোমার অবস্থান, অঙ্গভঙ্গি এবং গতিবিধি বুঝে নাও। নাটিকার জন্য তোমাকে কোন কাগজে তৈরি বা বিশেষ পোষাক পরতে হতে পারে। সেটা পরতে কোনো অস্বস্তি লাগলে শিক্ষককে জানাও।

তোমার দায়িত্ব হতে পারে বিভিন্ন অভিনয় উপকরণ তৈরি, যেমন মঞ্চ প্রস্তুত, মঞ্চের সাজসজ্জা, কাগজ বা বোর্ড দিয়ে গাছপালা এবং আসবাবপত্র তৈরি, স্বর্ণদৃত গারিয়েলের ডানা তৈরি ইত্যাদি।

তোমার দায়িত্ব হতে পারে নাটকের গানটিতে অংশ নেয়া। তুমি যদি আগে গানটি শুনে থাকো তাহলে তো বেশ। শিক্ষক তোমাকে গানটির একটি video দেখাতে পারেন। নতুবা শিক্ষক নিজেও গানটি গেয়ে শোনাতে পারেন। প্রস্তুতির সময়টুকুতে এই গানটিকে ভালোভাবে রপ্ত করো। এমন হতে পারে যে দলগতভাবে গানটি গাইতে হবে, তখন তোমার সহশিল্পীদের সঙ্গে একসাথে অনুশীলন করে গানটি রপ্ত করো।

চিত্রনাট্য

প্রস্তাবনা

মঞ্চে কয়েকজন শিশু গাছপালা, সূর্য, পাখি, সহজে বানানো যায় এমন জীব এবং জড়বস্তুর ভূমিকায় দাঁড়িয়ে থাকবে। দেবদূত সাজে সজ্জিত সূত্রধার এসে মাঝখানে দাঁড়িয়ে বলবে।

 

সুত্রধারঃ  নাসরত শহরে থাকতেন স্নেহময়ী একজন তরুণী। নাম তাঁর মরিয়ম (মারীয়া)। এই ধর্মপ্রাণ নারীর ঘোষেফ নামের একজনের সাথে বিয়ে হওয়ার কথা কিছুদিন পরেই।

প্রথম দৃশ্য

মরিয়ম (মারীয়া) শান্তভাবে হেঁটে যাচ্ছেন।

সুত্রধারঃ এই সেই তরুণী মরিয়ম (মারীয়া)। আজ ঈশ্বর তাঁর জন্য কী আশ্চর্য চমৎকার উপহারই না রেখেছেন।

দ্বিতীয় দৃশ্য

ঘরের ভেতরে মরিয়ম (মারীয়া) হাঁটু গেছে প্রার্থনারত। তাঁর চোখ বন্ধ, মুখমণ্ডল স্নিগ্ধ। হঠাৎ দৃশ্যপটে গাব্রিয়েল এর আবির্ভাব। চমকে গিয়ে মরিয়ম (মারীয়া) বলবেন। কয়েকজন শিশু আসবাবপত্র হিসেবে, কেউ বা জানালা, বা জানালার বাইরের গাছ হিসেবে সাজতে পারে। প্রথম দৃশ্যের এরকম সবাই এই দৃশ্যেও অংশগ্রহণ করবে।

মরিয়ম (মারীয়া) আহ! আমি বুঝতে পারছি না কী হচ্ছে। আপনি কে?

গাব্রিয়েল ভয় পাবেন না, প্রিয় মরিয়ম (মারীয়া)। আমি গাব্রিয়েল। ঈশ্বর আপনাকে একটি সংবাদ দিতে আমাকে পাঠিয়েছেন।

মরিয়ম (মারীয়া) ঈশ্বরের পক্ষ থেকে সংবাদ।? আমার জন্য?

গাব্রিয়েল হ্যাঁ, মরিয়ম (মারীয়া)। ঈশ্বর আপনাকেই নির্বাচন করেছেন এবং শীঘ্রই আপনি একটি সন্তানের জন্ম দিতে যাচ্ছেন যে হবে ঈশ্বরের পুত্র!

মরিয়ম (মারীয়া) হতভম্ব।

মরিয়ম (মারীয়া) কীভাবে আমি সন্তানের জন্ম দিতে পারি? আমি এখনও কুমারী।

গাব্রিয়েল প্রিয় মরিয়ম (মার্ক্সীয়া), আপনি চিন্তা করবেন না। এটা ঈশ্বরের চাওয়া। ঈশ্বরের প্রেরিত পবিত্র আত্মা আপনার উপরে নেমে আসবে এবং যিনি ভূমিষ্ঠ হবেন তিনি ঈশ্বরের পুত্র। তার নাম রাখবেন যীশু।

মরিয়ম (মারীয়া) শান্তভাবে বলবেন।

মরিয়ম (মারীয়া) যদি ঈশ্বর এটা চান, তবে তাই হোক। তাঁকে প্রনাম করি।

সবাই এপর্যায়ে সামনে এসে সমবেত কণ্ঠে গান গাইবে। যারা গাছপালা বা আসবাবপত্র সেজে আছে, তারাও সামনে এগিয়ে এসে গান গাইবে। গান হতে পারে “শোনো শোনো শোনো, শোনো দুনিয়ার শ্রান্ত ক্লান্ত ব্যথিত নর", যার কথা নিচে দেওয়া হলো।

শোনো শোনো শোনো

শোনো দুনিয়ার শ্রান্ত ক্লান্ত ব্যথিত নর

 তোমাদের মুক্তি লাগি' খুলেছে স্বর্ণদ্বার।।

 ঐ শোনো দূরে রাখালের ঘরে জাগিছে কলোচ্ছাস

 পাপের চিহ্ন মুছে গেলো আজ

 ঘুচিলো অন্ধকার (৩)।। 

ধর্মের নামে যুগ যুগ ধরি' জমিয়াছে যত পাপ 

প্রেম ও সত্যের তীব্র দাহনে

 হলো (আজ) ছারখার (২)।।

 মানুষে মানুষে জাতিতে জাতিতে 

যত রেষারেখি যত বিভেদ সা

মা মৈত্রী করুণার নীজে হলো আজ একাকার।।

 

Content added By

মহড়া! (উপহার ২১)

180
180

নাটকটি আসলেই মঞ্চায়ন হতে যাচ্ছে এই ভেবে মহড়ায় অংশ নাও। কিন্তু নাটকের আসল মঞ্চায়ন এবং এই মহতাতেও তোমার উপর অর্পিত দায়িত্বে কোনো ভুল হলে হতাশ হোয়ো না। ভুল করা দেখার একটি গুরুত্বপূর্ণ সোপান। এই ভুল থেকেই আমরা কীভাবে ভুল সমাধান করবো তা জানতে পারি। তোমাদের শিক্ষক এই মহতাতে তোমাদের করা ভুলগুলো সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

কয়েকটি ভুল সমাধানে তোমাকে যন্ত্রশীল হতে হবে, যেমন অভিনয়ের সময় সংলাপ যাতে ভুলে না যাও তাই সংলাপগুলো আত্মস্থ করতে চেষ্টা করবে। মোটকথা নাটকটি সার্থক হবে তোমার সর্বোত্তম চেষ্টা দ্বারা এবং তোমাকে বলে রাখি যারা সর্বোত্তম চেষ্টা করে তারা অবশ্যই উন্নতি লাভ করে।

নাটকের মহড়া শেষে শিক্ষকের বলা মন্তব্যগুলো মনোযোগ দিয়ে শোন। তোমার দায়িত্বের সাপেক্ষে কোনো ভুল সংশোধন করতে হলে বা নতুন কিছু সংযোজন করতে হলে তা করো। নাটিকাটি তোমার অন্যান্য সহপাঠীদের সাথে আসল মঞ্চায়নের পূর্বে অনুশীলন করো।

শিক্ষক তোমার বাবা-মা/অভিভাবক এবং ভাই-বোনকে নাটিকাটি দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। শিক্ষকের দেওয়া আমন্ত্রণ পত্রটি যত্ন করে বাসায় নিয়ে যাও এবং বাবা-মা/অভিভাবক এবং ভাই-বোনকে দাও।

 

Content added By

কাঙ্ক্ষিত দিন (উপহার ২২)

176
176

প্রথমেই জান যে তুমি এই নাটিকাটির জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েছ, তাই নাটিকাটি নিয়ে ভয় পাবার কোন কারণ নেই। মঞ্চায়নের পূর্বেই নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হও। সবচেয়ে বড় কথা হল সহপাঠীদের সাথে মিলেমিশে এবং আনন্দের সাথে নাটিকাটি মঞ্চায়ন করো।

 

একটা বিষয় তোমাকে বলে রাখি অনেক দর্শক দেখে হয়ত তোমার ভয় লাগতে পারে, পা কাঁপতে পারে। এটা খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা। সাহসের কাজ হল এই ভীতিকে জয় করে তোমার উপর অর্পিত দায়িত্বটি সুন্দরভাবে পালন করা। জেনে রাখ এরকম কয়েকবার পা কাঁপার পর তুমি কিন্তু আর ভয় পাবে না। আবার তোমার হয়ত জনসম্মুখে কথা বলতে লজ্জা লাগতে পারে। এটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। আসলে তোমার সহপাঠীদেরও ভিতরে ভিতরে এরকম লজ্জা লাগছে। তুমি শক্তিশালী হও, তোমার সহপাঠীদের পাশে দাঁড়াও এবং তাদের কাছে যেয়ে বলো যে, এ লজ্জাটা কোনো বিষয়ই না। বলো, লজ্জা জয় করলেই মজার মজার কাজে অংশ নেওয়া যায়।

Content added By

শিক্ষকের জন্য প্রশ্ন (উপহার ২৩-২৪)

204
204

শিক্ষক তোমাদের খ্রীষ্টধর্ম সংক্রান্ত কিছু বই দেখাতে পারেন। একটু ভেবে দেখো তো তোমার বাসায় তুমি এরকম কী কী বই দেখেছো। বই কিন্তু চমৎকার একটি বস্তু। বইয়ের ভিতর গল্প, জ্ঞান, অনুভূতি অনেক সুন্দর কিছু থাকে, তা নিয়ে কিন্তু বলছি না, বইয়ের বস্তুগত সৌন্দর্য নিয়ে বলছি। একটা বইয়ের সুন্দর মলাট থাকে, তার উপর নানান কারুকাজ থাকে এবং সময়ের সাথে সাথে একটা বই বস্তুগতভাবে একটা পরিবারের সদস্য হয়ে যেতে পারে।

পরিবারের সদস্য হওয়া এরকম একটা বই হল পবিত্র বাইবেল। এমন হতে পারে তোমার বাসায় থাকা বাইবেলটি তোমার দাদা-দাদী, নানা-নানু ব্যবহার করতেন। একটু মনোযোগ দিয়ে তোমার বাসার বাইবেলটি দেখলে অনেক ভাবনা তোমাকে আচ্ছন্ন করতে পারে। একটু কল্পনা করো তো তোমার দাদা-দাদী, নানা-নানু যখন বাইবেলটি পড়েছেন তখন তাদের মন এবং চারপাশে কত কী ঘটছিল। এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তোমাকে মনে করিয়ে দেই, তোমার প্রিয় এই মানুষগুলোর কাছে এই বাইবেল কেন এত প্রিয় ছিল, বলো তো? একটা কারণ হতে পারে, তারা এই বাইবেলের কাছে বিপদে দিশা পেয়েছেন, অন্ধকারে আলো পেয়েছেন। এই বাইবেলের গভীর বাণী তাদেরকে হয়ত জীবনের কষ্ট মোকাবেলায় অনেক শক্তি দিয়েছে। তোমাকে এই কথাগুলো বলছি কারণ তোমার জন্যও এই কথাগুলো কাজে লাগতে পারে। শিক্ষকের দেখানো খ্রীষ্টধর্মের গ্রন্থগুলো দেখার সময় এই ভাবনাগুলো মাথায় এনো।

শিক্ষক তোমাদেরকে একটি মজার কাজ দিতে পারেন, যে কাজে শিক্ষকের জন্য তোমাকে একটি প্রশ্ন তৈরি করতে হবে। প্রশ্নটি তৈরির জন্য এভাবে কাজটি করতে পারো: প্রথমেই ভেবে দেখ যে পুরো সময়টিতে তোমার মনে এমন কোনো প্রশ্ন এসেছিল কি না যে প্রশ্নের উত্তর তুমি এখনও পাওনি। যদি এরকম কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে তবে এখনই লিখে ফেল। একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ কিন্তু করতে হবে, তা হল তোমার প্রশ্নটি ভালো হল কি না অথবা এ প্রশ্নের উত্তর অন্য কেউ জানে কি না বা জানলেও কেমন জানে তা বুঝতে বাবা-মা/অভিভাবক, সহপাঠী, বন্ধু-বান্ধব কিংবা আত্মীয়-স্বজনের সাথে পরামর্শ করতে পারো। তাদের সাথে পরামর্শের পর যদি তোমার প্রশ্নটি ভালো মনে হয় তবে প্রশ্নটি শিক্ষককে করার জন্য মনস্থির করতে পারো।

যদি তোমার মনে এরকম প্রশ্ন না আসে তবে তোমার প্রথম বন্ধু কে হতে পারে, বলো তো? মনে হয় তুমি পবিত্র বাইবেলের কথা ভাবছো। উপহার ৬-১২-তে বর্ণিত পবিত্র বাইবেলের পদগুলো পড়ে দেখ। এই পড়া থেকেই তোমার মনে কোনো প্রশ্ন জাগ্রত হতে পারে। এরপর সেই প্রশ্নটি পরিবারের মানুষের সাথে পরামর্শ করে ভালো কি না নিশ্চিত করো।

যে পদগুলো পড়ার কথা বললাম তা পড়ে যদি তোমার মনে প্রশ্ন না আসে তবে আরেকটি কাজ করতে পারো।

তোমার বাবা-মা/অভিভাবক, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন বা প্রতিবেশীকে জিজ্ঞাসা করো যে খ্রীষ্টধর্মের মৌলিক বিষয়ে তাদের কোনো প্রশ্ন আছে কিনা যার উত্তর তাদের জানা নেই। এরকম এক বা একাধিক প্রশ্ন যদি পাও তবে ভেবে দেখ এর মধ্যে কোন প্রশ্নটি তুমি শিক্ষককে করবে।

তোমার নির্বাচিত প্রশ্নটি পরিষ্কারভাবে খাতায় অথবা নিচে লিখে ফেল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Content added By

ভালো প্রশ্নটির উত্তর (উপহার ২৫)

175
175

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক চাইলে শৃংখলার সাথে প্রশ্নটি জমা দাও। শিক্ষক এগুলোর উপরে একটি আলোচনার আয়োজন করতে পারেন, যেখানে তিনি প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর দিবেন। তোমার সহপাঠীদের করা প্রশ্নের সাপেক্ষে শিক্ষকের প্রদানকৃত উত্তরগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনবে। সাথে সাথে তোমার নিজের প্রশ্নের উত্তরের জন্য অগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করো।

তোমার প্রশ্নের সাপেক্ষে শিক্ষকের উত্তরটি তোমাকে খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে। প্রয়োজনে শিক্ষককে আরও প্রশ্ন করতে পারো। শিক্ষক তোমাকে কোনো প্রশ্ন করলে তার উত্তরও ভেবেচিন্তে দাও।

তোমার সহপাঠীর করা কোনো প্রশ্ন তোমার ভালো লাগলে তা নিচে লিখে রাখতে পারো। সাথে শিক্ষকের দেওয়া উত্তরও।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Content added By

পঞ্চাশত্তমীর পর্ব (উপহার ২৬)

134
134

আগের কোনো একটি সেশনে তোমার শিক্ষক তোমাকে বলেছিলেন পঞ্চাশত্তমীর পর্বের প্রার্থনায় খ্রীষ্টযাগে নিয়ে যাবেন। হয়তো তোমার বিদ্যালয়ের কাছাকাছি কোনো গির্জায় চার্চে এ প্রার্থনানুষ্ঠান হবে। শিক্ষক তোমাকে যে অনুমতিপত্র দিয়েছিলেন তা অভিভাবকের স্বাক্ষরসহ শিক্ষককে ফেরত দাও।

তোমরা জানো যে, খ্রীষ্টমন্ডলী স্বর্গারোহণ পর্বের পর পঞ্চাশত্তমীর পর্ব পালন করে। স্বর্গারোহণের পূর্বে যীশু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে স্বর্গে গিয়ে তিনি শিষ্যদের জন্য একজন সহায়ককে পাঠিয়ে দিবেন। যীশুর স্বর্গারোহনের পর প্রেরিত শিষ্যদের উপর পবিত্র আত্মা নেমে এসেছিলেন। পবিত্র আত্মার শক্তি ও অনুপ্রেরণা তাঁদের যীশুর বাণী প্রচার করতে সাহসী করে তুলেছিলো। পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত ও শক্তিশালী হয়ে যীশুর প্রথম শিষ্যেরা জগতের কাছে সুখবর পৌঁছে দিয়েছিলেন। যিরুশালেমে প্রথম খ্রীষ্টমন্ডলী পবিত্র আত্মার শক্তিতেই বৃদ্ধি পেয়েছিলো। তুমি যখন প্রার্থনা কর তখন যীশু পবিত্র আত্মাকে পাঠিয়ে তোমার মন ঐশপ্রেরণায় শক্তিশালী করে তোলেন। তোমরা সবাই দীক্ষাস্নানের সময় পবিত্র আত্মাকে লাভ করেছো। তোমাদের মধ্যে অনেকেই হস্তার্পন সংস্কার গ্রহণ করেছে এবং এ সংস্কারের মধ্য দিয়ে পবিত্র আত্মাকে অন্তরে গ্রহণ করেছো। এখন তোমরা পবিত্র আত্মার আলোকে আলোকিত হয়ে খ্রীষ্টমন্ডলীর যোগ্য সন্তান হয়ে উঠেছো।

প্রেরিত শিষ্যদের উপর পবিত্র আত্মার অবতরণের ঘটনাটি অলৌকিক। গির্জায় চার্চে বাইবেল পাঠ ও পুরোহিতের/যাজকের উপদেশে তোমরা এ বিষয়ে আরও জানতে পারবে।

 

আজ নিচের নির্দেশনাগুলো মনে রাখবে (শিক্ষকও তোমাকে এগুলো জানাবেন):

  •  শান্তভাবে ভক্তি সহকারে গির্জায় চার্চে প্রবেশ করবে 
  • প্রার্থনার প্রতিটি অংশে যথাযথভাবে অংশ নিবে
  • মনোযোগ দিয়ে বাইবেল পাঠ ও পুরোহিতের/খাজকের উপদেশ শুনবে
  •  প্রার্থনা অনুষ্ঠান শেষে সারিবদ্ধভাবে বের হয়ে আসবে ও বাবা-মা/অভিভাবক নিতে আসলে তাদের সাথে বাড়িতে চলে যাবে

মন দিয়ে প্রার্থনায় অংশ নিবে। বাইবেল পাঠ করতে চাইলে আগেই শিক্ষককে বলবে। এদিন পবিত্র আত্মা বিষয়ক গান গাওয়া হয়। যেমন এরকম একটি গান—

 

আত্মন! এসো হৃদয় উদ্যানে 

তুষিবো হৃদয় দানে।

যে মতো বায়ু বিহনে, জীবাদি বাঁচে না প্রাণে, 

সে মতো তোমা বিনে, বাঁচিনা এ জীবনে।

যেমন বায়ু সুখী করে, তেমন সুখী করো মোরে, 

সদাই স্নিগ্ধ অন্তরে, ডাকবো তোমায় এক প্রাণে।

ওহে প্ৰভু দয়াময়, উদ্যানে এসো এ সময়,

 নানা জাতি পুষ্পচয়, ফুটাও হৃদয়-কাননে।

বিশ্বাস ভক্তি পৰিত্ৰতা, প্রেম আনন্দ সহিষ্ণুতা, 

মধুর ভাব দয়া নম্রতা, চাই এই উদ্যানে।

আত্মা তুমি নেমে এসো, কৃপা রাশি নিয়ে এসো। 

শক্তি সাহস প্রেম আনন্দ পবিত্রতা নিয়ে এসো।

সবার সাথে সুর মিলিয়ে গান গেয়ো। প্রার্থনার প্রতিটি অংশে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ কোরো। পবিত্র আত্মার কাছে বিশেষ আশীর্বাদ যাচনা কোরো। বাড়িতে গিয়ে পঞ্চাশত্তমীর অনুষ্ঠানটি মনে করে নিচের ঘরে একটি ছবি এঁকে ফেলো।

 

 

 

 

 

 

 

 

Content added By
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion
;